জগন্নাথপুর প্রতিনিধি ::
সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার সাদিপুর গ্রামে প্রেমের বিয়ের কারণে নবদম্পতির উপর নেমে এসেছে চরম নির্যাতন ও হুমকির খড়গ। কন্যার পরিবারের পক্ষ থেকে বাড়িতে হামলা, প্রাণনাশের হুমকি এবং মিথ্যা মামলার অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তানজিনা বেগম ইভা পরিবারের অমতে প্রেম করে বিয়ে করেন জাকারিয়া আহমেদ নামের এক যুবককে। বিয়ের পর থেকেই কন্যার পিতা আব্দুল জলিল—সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার থানার মুল্লাপুর ইউনিয়নের কটু খালির পাড় গ্রামের বাসিন্দা— নবদম্পতির উপর চাপ সৃষ্টির নানামুখী তৎপরতা শুরু করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আব্দুল জলিল একাধিকবার জামাতা জাকারিয়ার সাদিপুরের বাড়িতে গিয়ে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে বলেন, “আমার মেয়েকে কোথায় লুকিয়ে রেখেছো বলো, না হলে সবাইকে মেরে ফেলব ।
সব চেয়ে ভয়াবহ ঘটনা ঘটে ২৪ জুলাই ২০২৪ইং তারিখে। তিনি একদল লোক নিয়ে আবার সেখানে যান, এবং তারা বন্দুক ও ছুরি নিয়ে সশস্ত্র অবস্থায় হামলা চালান। বাড়ির জানালা, দরজা লাঠি দিয়ে ভাঙচুর করার পাশাপাশি, তিনি এবং তার সঙ্গে থাকা লোকজন ছুরি হাতে ধাওয়া করে বাড়ির সদস্যদের হত্যা করার চেষ্টা করেন। এই ঘটনা শুধু সামাজিক নয়, বরং সরাসরি তাদের জীবনের ওপর হুমকি ছিল ।
এখানেই থেমে থাকেনি ঘটনা। গ্রামের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে তারা গুজব ছড়ান—এই বিয়ে “ইসলাম সম্মত নয়” এবং “সমাজের অসম্মান” করেছে। ফলে স্থানীয়ভাবে নবদম্পতিকে একঘরে করারও চেষ্টা চলছে।
অভিযোগ রয়েছে, শুধুমাত্র মানসিক চাপে রাখার জন্য ২১ মে ২০২৩ ইং তারিখে জামাতা জাকারিয়া আহমেদকে আসামি করে বিয়ানীবাজার থানায় অপহরণের মিথ্যা মামলা (জি.আর. ১২২/২০২৩) দায়ের করেন কন্যার পিতা। এ মামলায় নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে।
গোষ্ঠীগত এই হুমকি, সামাজিক চাপ এবং মিথ্যা মামলা নিয়ে তানজিনা ও জাকারিয়া বর্তমানে চরম আতঙ্কে আত্মগোপনে রয়েছেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন, এখনো পর্যন্ত কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ফলে এলাকাজুড়ে ক্ষোভ ও উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়েছে।
নবদম্পতি দ্রুত সুষ্ঠু তদন্ত ও আইনি নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছেন।